নতুন স্টুডেন্ট হিসাবে ফিনল্যান্ডে এসে যা যা করতে হয়

প্রতি বছর বাংলাদেশ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর স্টুডেন্ট ফিনল্যান্ডে পড়ালেখা করার জন্য আসে। ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটিগুলো সাধারণত ৫০% থেকে ১০০% স্কলারশিপ অফার করে থাকে এবং স্টুডেন্ট তার ফ্যামিলিসহ ফিনল্যান্ডে আসতে পারে। মুলত এই সুবিধার জন্যই দিনে দিনে ফিনল্যান্ড বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমি নিজে ফিন্যলান্ডে এসেছি স্টুন্ডেন্ট হিসেবে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আজকে ব্লগ লিখেছি ফিনল্যান্ডে স্টুডেন্ট হিসাবে এসে প্রথমেই কি কি কাজ করতে হবে। আশা করি তথ্যগুলো আপনাদের কাজে লাগবে।

১। সিমকার্ড নিতে হবে

হেলসিংকি এয়ারপোর্টে নেমে আরকিওস্কি পেয়ে যাবেন। এখান থেকে সিম কার্ড কিনে নিতে পারবেন। বিভিন্ন কোম্পানির সিম কার্ড পাওয়া যায়। যেমনঃ ডিএনএ, তেলিয়া, এলিসা। আমার মতে, স্টুডেন্টদের জন্য ২৯ ইউরো দিয়ে ছয় মাস মেয়াদি ইন্টারনেট সহ ডিএনএ সিম কার্ড নেয়াটা সাশ্রয়ী হবে। সিম কার্ড নিতে কোন ধরনের ডকুমেন্টস এর দরকার হয় না, শুধুমাত্র পাসপোর্ট থাকলেই হবে। তবে মনে রাখবেন এই সিম আপনি হারিয়ে ফেললে অথবা ভেঙ্গে গেলে পুনরায় সেই সিম কার্ড আর তুলতে পারবেন না। একবছর ফিনল্যান্ডে থাকার পরে সেই সিম কোম্পানির অফিসে গিয়ে সিম কার্ডটি নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।

২। পপুলেশন রেজিস্ট্রেশন অফিসে গিয়ে নাম এন্ট্রি করতে হবে

বাংলাদেশে থাকা অবস্থাতেই পপুলেশন রেজিস্ট্রেশন এর জন্য এপোয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন। এই রেজিস্ট্রেশন না হওয়া পর্যন্ত আপনি ব্যাঙ্ক একাউন্ট করতে পারবেন না। সাধারনত রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে স্টুডেন্টদের জন্য ৩ সপ্তাহ এবং বাকি ফ্যামিলি মেম্বারদের জন্য ৪ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। তবে এর থেকে কম অথবা বেশি সময় ও লাগতে পারে।

৩। ইউনিভার্সটিতে গিয়ে আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।

আপনি যে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট সেখানের অফিসে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট দেখালে আপনার স্টুডেন্ট আইডি কার্ড দিয়ে দেবে। যেমনঃ তাম্পের ইউনিভার্সিটির TREY অফিস থেকে আইডি কার্ড দিয়ে থাকে। সব ইউনিভার্সিটিতে প্রত্যেক স্টুডেন্ট এর জন্য একজন করে টিচার টিউটর থাকে। যাদের কাজ হচ্ছে আপনাকে সব ধরনের সাহায্য করা। টিচার টিউটরের সাথে কথা বলেও আইডি কার্ড কালেক্টের ব্যাপারে আইডিয়া নিতে পারবেন। সব থেকে ভালো দিক হলো, তাম্পেরে ইউনভার্সিটির আইডি কার্ড দিয়ে ট্রেনে এবং ইউনভার্সিটির ক্যাফেতে ডিস্কাউন্ট পাওয়া যায়। এছাড়াও ফিদা-সেকেন্ড হ্যান্ড এর দোকানে ১৫% ডিস্কাউন্ট পাওয়া যায়।

৪। পুলিশ কার্ড করতে হবে।

পপুলেশন এন্ট্রি হয়ে গেলে পুলিশ কার্ড করতে হবে। এটা মুলত একটা আইডি কার্ড(ফিনল্যান্ডে লোকজন এটাকে আইডকার্ড বলে), যেটা দিয়ে আপনি অনলাইন ব্যাঙ্কিং এ অথেন্টিকেশন একটিভেট করতে পারবেন। পুলিশ কার্ড করার জন্য ৬০ ইউরো খরচ করতে হবে। এছাড়াও ড্রাইভিং লাইসেন্স কনভার্ট করতে গেলে এবংকুরিয়ার সার্ভিসে পার্সেল তুলতে গেলে এই পুলিশ কার্ড দরকার হয়।

৫। বাস কার্ড করতে হবে।

কম খরচে বাসে চলাচল করার জন্য অবশ্যই বাস কার্ড করতে হবে। বাস কার্ড করার জন্য আপনার পাসপোর্ট এবং ৬ ইউরো লাগবে।

৬। ব্যাংক একাউন্ট করতে হবে।

পপুলেশন এন্ট্রি এবং পুলিশ কার্ড হয়ে গেলে ফিনল্যান্ড এর ব্যাংকগুলোতে ফোন দিয়ে এপোয়ন্টমেন্ট নিতে হবে। নির্দিস্ট দিনে পাসপোর্ট, আরপিকার্ড ও পুলিশ কার্ড নিয়ে যাবেন। ব্যাঙ্ক এর অফিসার আপনার সব ডকুমেন্টস স্ক্যান করে নেবে। কোন রকম ডিপোজিট এর দরকার নেই। সবকিছু ঠিক থাকলে ১ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার বাসার এড্রেসে ডেবিট কার্ড চলে আসবে। আপনি যদি দেশ থেকে ইউরো নিয়ে আসেন তবে সেটা ব্যাংকে ডিপোজিট করে দিতে পারবেন। এরজন্য আপনাকে দেশ থেকে টাকা কনভার্সন এর রিসিট এবং পাসপোর্ট এর এন্ডোর্সমেন্ট পাতা দেখাতে হবে।

Total 0 Votes
0

Tell us how can we improve this post?

+ = Verify Human or Spambot ?

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

*
*

Back To Top