গাড়ীর অল্টারনেটর বেল্ট ছিড়ে যে বাজে অভিজ্ঞতা হলো

বাসা থেকে গাড়ি বের করার পুর্বে প্রতিদিনই চেক করে নিই যে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা। আজকেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। বাচ্চার জন্য নিডো দুধ আনার জন্য বন্দর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কিছুদুর চলার পরে হালকা একটা চিরচির শব্দ পাচ্ছিলাম গাড়ির ভেতর থেকেই। পাত্তা দিলাম না, ভাবলাম যে কয়েকদিন আগেই পাওয়ার স্টিয়ারিং এর কাজ করিয়েছি, হয়তো শব্দটা সেখান থেকেই আসছে। পাত্তা না দিয়ে এখানেই ভুলটা করে ফেললাম!

যাই হোক, কোন সমস্যা ছাড়াই দুধ কিনে বাসার উদ্দেশ্যে বের হলাম। গাড়ীর জানালা বন্ধ, এসিও চালু, শব্দটা ক্রমশ বাড়ছে। ঠিক নাইয়োরপুল পয়েন্টে আসার পরে ঠকঠক শব্দ করে গাড়িটার স্টার্টই বন্ধ হয়ে গেলো, তাও আবার একেবারেই ট্রাফিক পুলিশের সামনে। যেহেতু, প্রায় দুই বছরের উপরে গাড়ী ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা আছে, তাই হঠ্যাৎ গাড়ী বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘাবড়ে গেলাম না। কিন্তু নতুন অবস্থায় যখন কোন কারনে গাড়ি বন্ধ হয়ে যেতো তখন খুবই ঘাবড়ে যেতাম এবং এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।

আমার গাড়িটা হঠ্যাৎ বন্ধ হয়ে গেছে দেখে ট্রাফিক পুলিশ ভাইটি নিজেই এগিয়ে এলেন এবং জিজ্ঞাস করলেন কি হয়েছে। খুবই ভালো লোক ছিলেন, আমার পেছনে থাকা গাড়িগুলোকে সাইড দিয়ে চলে যেতে বললেন। আর আমাকে বললেন যে চেক করে দেখতে কি হয়েছে। বনেট খুলে দেখি, অল্টারনেটরের বেল্ট ছিড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।

tear car alternator belt

ট্রাফিক পুলিশ আমাকে বললেন যে গাড়িটা পাশের কোথাও সরিয়ে নিতে, যেহেতু একেবারেই ব্যস্ত রাস্তার মাঝে গাড়িটা থেমে আছে তাই জ্যাম লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

আমি আগে থেকেই জানতাম যে, গাড়ির অল্টারনেটর বেল্ট ছিড়ে গেলে খুব বেশীক্ষন গাড়ি চালানো যাবে না, ইঞ্জিন গরম হয়ে বড় কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এইজন্য গাড়িটাকে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে পার্কিং করে রাখি। এরপরে পরিচিত ওয়ার্কশপের ইঞ্জিনিয়ারকে ফোন দিয়ে বেল্ট নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করি।

cracked car belt

উনি ঠিক ৩০মিনিট এর মধ্যেই নতুন বেল্ট ও বেল্ট পরিবর্তন করার জন্য যা যা লাগে সব নিয়ে চলে আসলেন এবং গাড়িটা ঠিক করে দিলেন। এখন আপনাদের সাথে যদি ভবিষ্যতে এমন ঘটনা কখনো ঘটে তাহলে কি করবেন।

  • প্রথমেই মাথা ঠান্ডা রাখুন। গাড়ির বেল্ট ছিড়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু বেল্ট ছিড়ে গেলে কখনোই গাড়ি চলাবেন না। এতে করে আপনার গাড়ির অন্যান্য যন্ত্রাংশ নস্ট হয়ে রিপেয়ারিং খরচা বাড়িয়ে দিবে।
  • যেহেতু বেল্ট এর কন্ডিশন বাহির থেকে সহজে বুঝা যায় না, তাই প্রতি ১০০০-৩০০০ কিলো চলার পরে বেল্ট এর অবস্থা চেক করে দেখুন। কন্ডিশন খারাপ হলে অবহেলা না করে সাথে সাথে পরিবর্তন করে ফেলুন।
  • গাড়ি ঠান্ডা অবস্থায় বেল্টের ভেতরের দিকে হাতে দিয়ে বেল্টের বর্তমান কন্ডিশন পরিক্ষা করে নিতে পারেন।
  • গাড়িতে একসেট স্পেয়ার বেল্ট রাখতে পারেন। এতে করে যে কোন ওয়ার্কশপ থেকে খুব সহজেই বেল্ট পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। বেল্টের দাম কোয়ালিটি এবং গাড়ি ভেদে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়।
  • সম্ভব হলে গাড়ির সবগুলো বেল্টকে একই সাথে পরিবর্তন করে ফেলুন।
  • আপনার পরিচিত ওয়ার্কশপের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখুন। কারন, রাস্তায় হঠ্যাৎ বেল্ট ছিড়ে গেলে বেল্ট পরিবর্তন করার জন্য উনাদের দরকার হবে।
Total 0 Votes
0

Tell us how can we improve this post?

+ = Verify Human or Spambot ?

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

*
*

Back To Top